গুহায় গোপনে জীবন
পাাতাল পুরীর প্রাণীরা
পর্ব ৩
---------------------------------------------------------------------
ভাগবত ও দেবী পুরাণ মতে নরক, ২৮ টি যথাক্রমে:- তামিস্র, অন্ধতামিস্র, রৌরব, সন্দংশ, পূয়োদ, বজ্রকণ্ট-শাল্মলী , সূকরমুখ, প্রাণরোধ ,মহারৌরব,
কুম্ভীপাক, বিশসন, লালাভক্ষ, সারমেয়াদন,
কালসূত্র,অসিপত্রবন,বৈতরণী, অয়ঃপান, ক্ষারকর্দম, রক্ষোগণ ভোজন, শূলপ্রোত,
অন্ধকূপ,কৃমিভোজন,অবীচিমৎ, দন্দশূক, অবটনিরোধন, পর্যাবর্তন, সূচীমুখ।
কিন্তু বাস্তবে ভুঅভ্যন্তরে গুহা প্রান্তরে বসবাস করে নানা অমেরুদণ্ডী ও মেরুদণ্ডী প্রাণী সমূহ।
দেখেনেওয়া যাক পাতাল পুরীর প্রাণীদের..........
স্তন্যপয়ী
🦇🦇🦇🦇🦇🦇🦇🦇🦇🦇🦇🦇🦇🦇🦇🦇
বাদুড় এক কিম্ভুতকিমাকার জীব, পাখির মত উড়তে পারে অথচ স্তন্যপায়ী আবার উল্টো হয়ে ঝুলে থাকে।
গুহাবাসী জীবন আপন করেছে যে বাদুড়.....
✓দক্ষিণ পূর্ব আফ্রিকার পতঙ্গভূখ বাদুড়
বিজ্ঞান সম্মত নাম Hypsugo savii ।
✓ পূর্বিয় ছোট্ট পেয়ে বাদুড় বা Eastern small-footed myotis যার
বিজ্ঞান সম্মত নাম Myotis leibii,
আমেরিকার পূর্ব অংশ, নতুন ইংল্যান্ড, উত্তর জর্জিয়া ইত্যাদি স্থানে গুহা অভ্যন্তরে এদের পাওয়া যায়।
✓ কিউবার গুহায় দেখা যায় চোঙা কানের বাদুড় বা
Cuban greater funnel-eared bat
বিজ্ঞান সম্মত নাম Natalus primus
এছাড়াও প্রয়োজনে বহু স্তন্যপায়ী ভূপৃষ্ঠ থেকে
ভূ অভ্যন্তরে বসবাসের জন্যে বেশী সাচ্ছন্দ, এদের বলা হয় Fossorial ফসরিয়াল, লাতিন শব্দ fossor অর্থাৎ diggar বা খননকারী। তবে খাদ্যের প্রয়োজনে এরা উপরে উঠে আসে বৈকি।
ছুচো, ইঁদুর, মীরক্যাট প্রভৃতি।
✓মীরক্যাট meerkat বেজী জাতীয় প্রাণী যার দেখা মেলে দক্ষিণ আফ্রিকায়।
গর্ত খুঁড়তে পটু এবং সংঘবদ্ধ
এই প্রাণীর
বিজ্ঞান সম্মত নাম Suricata suricatta।
✓ নগ্ম ছুচো ইঁদুর বা Naked mole-rat বা
বালুকা ছানা বা sand puppy
বিজ্ঞান সম্মত নাম Heterocephalus glaber ।
নিবাস পূর্ব আফ্রিকা, এবং গর্ত খুঁড়ে বসবাস করতে পটু। এই প্রাণীর বিভিন্ন গুণের মধ্যে
√ ব্যাথা অনুভব না করা
√ টিউমার ও ক্যান্সার প্রতিরোধী দেহ
√ দীর্ঘ জীবন
√ অক্সিজেন স্বল্পতায় বেচেঁ থাকার ক্ষমতা
প্রভৃতি গবেষণার বিষয়বস্তু।
উভচর
🐸🦎🐸🦎🐸🦎🐸🦎🐸🦎🐸🦎🐸🦎🐸
জি হ্যাঁ! পাতালে পানি যখন আছে উভচর থাকতে দোষ কি??
✓ অস্ট্রেলিয়ার গুহাবাসী ব্যাঙ ::
বিজ্ঞান সম্মত নাম Ranoidea cavernicola।
এর ওপর নাম লম্বা গুহার গেছো ব্যাঙ বা Long Cave Treefrog।
✓ চীনের চুনা পাথরের গুহায় থাকা লাল ফুটকি ও দাঁতওয়ালা ব্যাঙ (Red Spotted Toothed Toad) Guizhou lazy toad::গুইজহাউ অলস ব্যাঙ::
চীনের হুনান, গুইজহাউ প্রদেশে এদের দেখা মেলে।
সর্বভুক চীনাদের খাদ্যের টানে এদের অস্তিত্ব সংকটে।
বিজ্ঞান সম্মত নাম Oreolalax rhodostigmatus ।
✓ গুয়াতেমালার গুহা ব্যাঙ::
গুহাবাসী কণ্টক বুড়ো আঙুলে ব্যাঙ বা Spikethumb frogs , গুয়াতেমালার পশ্চিমে গুহা অভ্যন্তরে জলাশয়ের কাছে থাকে।
বিজ্ঞান সম্মত নাম Plectrohyla tecunumani ।
শুধু ব্যাঙ নয় আছে সালামান্ডারও
🦎 টেক্সাসের অন্ধ সালামান্ডার::
টেক্সাসের সান মার্কোস এর নিকটবর্তী জলাপূর্ন গুহায় দেখা মেলে মাংসাশী এই অন্ধ সালামান্ডারের বিজ্ঞান সম্মত নাম Eurycea rathbuni।
🦎 অস্টিন জলজ অন্ধ সালামান্ডার::
Austin blind salamander::
এরা paedomorphic পেডোমরফিক মানে অন্তর্বর্তী দশা গুলি দেখা যায় না, ছোট দের পূর্নবয়স্ক দের মত দেখতে এবং এরা জলজ।
বিজ্ঞান সম্মত নাম Eurycea waterlooensis।
🦎 বাদামী গুহা-সালামান্ডার ::
ইতালির সারডিনিয়া তে দেখা মেলে
সারডিনিয়ান গুহা-সালামান্ডার
বিজ্ঞান সম্মত নাম Speleomantes genei
🦎 রাজকীয় গুহা-সালামান্ডার ::
Imperial cave salamander বা scented cave salamander বা গন্ধময় গুহা-সালামান্ডার সার্ডিনিয়াতে দেখা যায়।
বিজ্ঞান সম্মত নাম Speleomantes imperialis।
মানুষের অত্যাচারে রাজ্য হারা হতে চলেছে এই রাজা।
মাছ
🐟🐟🐟🐟🐟🐟🐟🐟🐟🐟🐟🐟🐟🐟🐟🐟
জলাধার যুক্ত গুহায় দেখা মেলে বিভিন্ন মাছের।
🐟 গুহার দেবদূত মাছ:: cave angel fish বা waterfall climbing cave fish গুহা বাইতে পারে।
এদের দেখা মেলে থাইল্যান্ডের মে হং সন প্রদেশের গুহায়। এরা অন্ধ এবং বিলুপ্তির আতঙ্কে রয়েছে।
বিজ্ঞান সম্মত নাম Cryptotora thamicola।
🐟 চোখ দাঁত হীন জিওল গুহা মাছ:::
উত্তর আমেরিকার টেক্সাসে দেখা যায় এদের।
দাঁত নেই, শরীরে কোনো রঞ্জক নেই।
বিজ্ঞান সম্মত নাম Trogloglanis pattersoni ।
🐟 দৃষ্টিহীন গুহা মাছ টেট্রা :::
টেক্সাস ও মধ্য মাক্সিকো তে দেখা যায় এই মাছ।
বিজ্ঞান সম্মত নাম Astyanax mexicanus ।
তবে যারা গুহায় থাকে না, তাদের কিন্তু চোখ থাকে।
🐟 হংস চঞ্চু স্বর্ণ রেখা মাছ::
duck-billed golden-line fish শুধু মাত্র চীনেই পাওয়া যায়।
বিজ্ঞান সম্মত নাম
Sinocyclocheilus anatirostris ।
🐟 চীনের পাথুরে জলার মাছ:: গুয়াঙ্গসি প্রদেশ, ইউন্নান প্রদেশের গুহায় দেখা যায় মিঠে জলের
কাঁটা যুক্ত পাখনাওয়ালা মাছ
বিজ্ঞান সম্মত নাম Yunnanilus bailianensis।
শুধুমাত্র ভূপৃষ্ঠ নয়, ভূ অভ্যন্তর কম বৈচিত্র্যময় নয়।
প্রকৃতিসৃষ্ট গুহা কন্দর যেখানে সুযোগ বা সুবিধে প্রাণ স্থান নিয়েছে সেইখানে।
কিন্তু কতদূর আমরা খুঁজে পেয়েছি??
ভূ পৃষ্ট থেকে প্রায় প্রায় ৩৫ কিলোমিটার গভীর অবধি অংশের নাম Crust বা ভূত্বক। তার মধ্যে মাত্র ৩--৩•৮ কিলোমিটার অবধি পেয়েছি প্রাণের অস্তিত্ব।
কিন্তু ওই টুকুই? খোঁজ এখনও চলছে, যত দিন না পাওয়া যাচ্ছে ততদিন চলুক কল্পনা,
জুল ভার্ন দেখিয়েছেন পথ..................
রত্নাকর সাগর নানা জীব বৈচিত্র্যময়, পরবর্তী পর্বে থাকবে সাগরের ভিতর জীবন।
সাহায্যে
অন্তর্জাল।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন