শ্বেত শোণিত সমুদ্র সৃষ্ট
🩸🩸💧শ্বেত শোণিত সমুদ্র সৃষ্ট💧🩸🩸
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
রুই এর মাথাটি কাটার পর গল গল করে রক্ত বেড়িয়ে এল।
মেছো শান্তনু বলল " দ্যাকসেন এক্কেরে টাটকা"
সেই মাছ কড়াই তে চাপানোর পর বোটকা গন্ধে ঘর ভরে গেল, সঙ্গে গিন্নির বাক্য তুফান .........
🙎🏻♀️:: বলি একটা, একটা কাজ ভালো ভাবে করতে পারোনা? বলি চোখ কপালে তুলে বাজার করতে কে বলেছিল? বাজার থেকে যত আবর্জনা এনে ঘরে জড়ো করা, এই আবর্জনা আজ তোমাকেই গেলাবো.....➰➿➰➿➰➿।
এক কাপ চায়ের অনেক আশা ছিল, বোধ হয় আর পাবো না..
🤦🏿:: দেখো গিন্নি, টাটকা লাল রক্ত বেড় হতে দেখেছি, চোখ একটু সাদা ছিল কিন্তু.......
আর এই রক্তই হল সব। জানো কি প্রায় সমস্ত মেরুদণ্ডী প্রাণীদের রক্ত লাল হয়, প্রায় বলছি এই কারণেই একধরনের স্বচ্ছ মাছ হয় মাথাটি রোগা,
আর এই রোগা মাথার জন্যেই এর নাম Leptocephalus লেপ্টোসেফালাস।
এদের লার্ভা দশায় রক্ত লোহিত কণিকা রোহিত হয়। যখন এরা বেড়ে উঠে ইল মাছে রূপান্তরিত হয় তখন এদের রক্ত লাল হয়।
লালের ব্যাপারটায় আসি,
রক্ত মূলত প্লাজমা বা ধাত্র এবং করপাসল বা কণিকা দ্বারা নির্মিত।
কণিকা দের মধ্যে
✔️শ্বেত রক্ত কণিকা বা leucocytes
✔️অনুচক্রিকা বা thrombocytes
✔️লোহিত রক্ত কণিকা বা erythrocytes
এই এরিথ্রোসাইট বা লোহিত রক্ত কণিকার জন্যেই রক্তের রং লাল। সাধারণত স্তন্যপায়ী বাদে বাকি মেরুদণ্ডী প্রাণীদের লোহিত রক্ত কণিকা ডিম্বাকার এবং দ্বি-উত্তল বা biconvex,
যেমন পাখি, ব্যাঙ,মাছেরও তাই।
লোহিত রক্ত কণিকার প্রায় ৬০➖৭০% জল, বাকি ৩০➖৪০% কঠিন বস্তু দিয়ে তৈরি। যার মধ্যে ১% মত স্নেহ বস্তু , •৫➖১% প্রোটিন এবং বাদবাকি ২৯% হিমোগ্লোবিন রয়েছে।
লোহিত রক্ত কণিকার এই লোহিত বর্ন এই হিমোগ্লোবিনের কারণেই।
🙎🏻♀️:: সকাল সকাল এই লেকচার ভালো লাগে না, তোমার ঘটে বুদ্ধি আর শরীরে রক্ত আছে কিনা সন্দেহ ➿➰
🤦🏿:: একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের শরীরের ভরের ৮% হল তার রক্তের পরিমাণ।
ধরা যাক ওজন ৭০ কিলোগ্রাম,
সুতরাং
রক্তের পরিমাণ= ৭০ X ৮%X১ লিটার/ কিলোগ্রাম।
ওই ধরে নাও ৫➖৬ লিটার।
তো এই ৬ লিটার রক্তের মধ্যে ৩•৫ লিটার হল ধাত্র
বাকি ২•৫ তবে গিয়ে দাড়ালো কণিকা।
হ্যাঁ আর একটা ব্যাপার মানুষ সহ অন্যান্য স্তন্যপায়ীদের লোহিত রক্ত কণিকা উভ-অবতল বা biconcave।
জানো লোহিত রক্ত কণিকা মোটে ≈ ১২০ দিন বাঁচে।
🙎🏻♀️:: এলেন আমার গুরু ঠাকুর, তবে হিমোগ্লোবিন লাল কেন শুনি?
🤦🏿:: হিমোগ্লোবিন বলতে গেলে একটি সংযোজিত ক্রমোপ্রোটিন conjugated chromoprotein যাতে ৯৬% গ্লোবিন প্রোটিন, যা কিনা আলফা ও বিটা গ্লোবিন সূত্রে গাঁথা।
বাদবাকি ৪% হল লৌহ গঠিত রঞ্জক নাম heme হিম।তো এই লৌহ গঠিত রঞ্জক নাম heme হিম লোহিত বরনের কারণ।
🙎🏻♀️:: তা হলে বলছ সব মাছেই মোটামুটি লাল রক্ত পাওয়া যায়?
🤦🏿:: বরফ মাছের নাম শুনেছ?
🙎🏻♀️:: সাক্ষাৎ দেখেছি আর এখন কড়াইতে চাপিয়েছি, কবেকার কে জানে মাছ, বরফে ঢোকানো ছিল,➿➰➿
🤦🏿:: না গো, বরফে জমানো মাছ নয়, বলছি
বরফ মাছের কথা, icefish বা বলা ভাল
কুমীর বরফমাছ Crocodile icefish ।
তবে বরফের সাথে সম্পর্ক হল এটি অন্টারটিক মহাসাগরের অধিবাসী।
এরা রশ্মি পাখনা যুক্ত মাছেদের পরিবার Notothenioidei নোটোথেনৈডি এর অন্তর্গত।
এরা যে জলজ পরিবেশে থাকে তার তাপমাত্রা -১•৮➖২° সেনিগ্রড অবধি নাবতে পারে।
জানো, ফেলে আসা একুশে মানে ২০২১ এর ফেব্রুয়ারিতে বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেয়েছে বরফমাছের নতুন এক কলোনী বা জনন ক্ষেত্র।
🐟মাছটির বড় সুন্দর নাম Jonah's icefish
বা জনাহ্ এর বরফমাছ।
বিজ্ঞান সম্মত নাম Neopagetopsis ionah।
🐟শূল বরফমাছ বা pike icefish হল এমনি আরেক কুমীর বরফমাছ যাদের উত্তুরে বরফমাছ বা northan icefish নামেও ডাকা হয়।
বিজ্ঞান সম্মত নাম Champsocephalus esox।
🐟মাছের মুখের গঠনে সাহায্য করে এক অস্থিময় কাঠামো নাম operculum অপারকিউলাম।
যে মাছটির কথা বলব তার এই অপারকিউলাম আকশি যুক্ত বা hooked।
তাই সাধ করে এর নাম হয়েছে মানে
বিজ্ঞান সম্মত নাম Chionodraco hamatus।
তো যাদের কথা বললাম তাদের শরীরে হিমোগ্লোবিন নেই এবং লোহিত কণিকাও নেই,
ইল খোকাদের মত শুধু ছোট বেলাতেই নয়, পূর্ণবয়স্ক বেলাতেও থাকে না। তাই এদের রক্তের রঙ সাদা।
২০১৯ সালে Corliss করলিশ সহ প্রমুখ জীববিজ্ঞানীরা এটি ধারণা করেন যে লৌহ যুক্ত খাদ্যের অপ্রতুলতা এর কারণ হয়ত হতে পারে।
তবে আরো গবেষণা চলছে।
হৃদয় আছে কিন্তু হৃদয় পেশীর সাথে সম্পর্কযুক্ত myoglobin মায়োগ্লোবিন পর্যন্ত এদের শরীরে নেই অথবা হয়ত আছে অন্য কোনো আকারে অন্য কোনো স্থানে, কে জানে?
শ্বেত শোণিত সমুদ্র সৃষ্ট এই মীন অবতারকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে Channichthyidae চান্নিচথয়িডে।
চা পেলে মন্দ হতো না.....
🙎🏻♀️:: শোনো যতই সাদা রক্তের মাছের গালগল্প কর, আসল ব্যাপারটা দেখোনি,
যখনই মাছওয়ালা তাজা মাছ কাটে সেই রক্ত,
মরা বাসী মাছের কানকো ফাঁক করে ফুলকোতে ঢেলে দেয়, এই নিজের চোখে দেখা বুঝলে বিদ্যে বোঝাই বাবুমশাই!
উঃ বরফমাছ, বরফবাং গাল গল্পের আর শেষ নেই!
🤦🏿:: না বরফব্যাঙ বা ice frog কিন্তু আলাদা, এরা অনেক কম তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে,
বরফ জলে স্বচ্ছন্দে সাঁতার কেটে বেড়ায় এরা যদিও ব্যাঙাচি তা পারে না।
বিজ্ঞান সম্মত নাম Amietia vertebralis।
একটু গরম চা হবে?
🙎🏻♀️:: মেছো শান্তনুকে বল, প্রাণ ভরে চা খাওয়াবে,
দু বছর আগেকার পচা মাছ নিয়ে এসে➿➰➿
কি আর করা? কেউ একটু চা খাওয়াতে পারেন?
কি মতামত আপনাদের?
বিষয় সাহায্যে
Mordan approach to a Text book of Zoology
By chakraborty and Chatterjee।
Human anatomy and physiology
By Ross and Wilson।
ছবি ও অন্যান্য সূত্রে
অন্তর্জাল।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন