মগজ বীক্ষণ
🧠🧠🐟মগজ বীক্ষণ🐟🧠🧠
আয় তোর মুণ্ডুটা দেখি, আয় দেখি 'ফুটোস্কোপ' দিয়ে,
দেখি কত ভেজালের মেকি আছে তোর মগজের ঘিয়ে।
কোন দিকে বুদ্ধিটা খোলে, কোন দিকে থেকে যায় চাপা,
কতখানি ভস্ ভস্ ঘিলু, কতখানি ঠক্ঠকে ফাঁপা।
যে আজ্ঞে, সুকুমার রায় একটুও বাড়িয়ে বলেন নি, মগজ দর্শন করতে হলে তুরপুন চালাতে হবে বৈকি।
কেন? আরে বাবা হাড়ের বক্সে বন্দী যে?
পূর্ণবয়স্ক মানুষের মগজ তার দেহের ওজনের প্রায় ২% এবং আয়তন পুরুষের প্রায় প্রায়
১২৬০ ঘন সেন্টিমিটার এবং নারীর নয় নয় করে তাও ১১৩০ ঘন সেন্টিমিটার।
কিন্তু তার দর্শন পেতে গেলে প্রথমে সরাতে হবে চুল, যাদের নেই দুঃখ নেই কারণ তার পর আছে ত্বক,
সেইটে সরালে পাবে খুলি বা সেই হাড়ের বাক্স,
যেই সেইটে খুলবে পাওয়া যাবে তিনটি আচ্ছাদন, একত্রে যাদের বলে meninges মেনিঞ্জেস।
প্রতিটি স্তর যা বাইরে থেকে যথাক্রমে ডিউরা ম্যাটার, এ্যারাকনয়েড ম্যাটার ও পিয়া ম্যাটার নামে পরিচিত তারা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষামূলক স্তর ও শারীরিক কার্যাবলী পালন করে থাকে।
এ যেন Matryoshka doll বা রাশিয়ার মাত্রিওস্কা পুতুল, কেন? পুতুলের ভিতর পুতুল তার ভিতর আর একটি।
তা হলে মগজ দর্শন অসম্ভব?
চলুন তল অতল রসাতলে যাওয়া যাক, আরে সব রসাতলে যাচ্ছে আমি আপনি বাদ থেকে কি লাভ?
উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরের কৃষ্ণকায় গভীরে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮০০--১০১৫ মিটার গভীরে দর্শন মেলে রশ্মি পাখনা যুক্ত এক মাছের যাদের মাথার উপরে আছে স্বচ্ছ তরলপূর্ন আস্তরণ যার ভিতর দিয়ে মাছটির আঁখির অক্ষিকাচ অবধি দেখা যায়।
পারদর্শী মুড়োর মাছ দেখে বিজ্ঞানীদের মগজ মন্থন শুরু হল, প্রশ্ন কেন? আর কারো তো নেই তবে ওর কেন?
বিস্তর মাথা ঘামানোর পরে শেষে ২০০৮ সালে বিজ্ঞানীরা এই সিদ্ধান্তে এলেন যে এই পারদর্শী আস্তরণের ভিতরে চোখ উপরে সামনে ঘুরতে পারে।
আমেরিকার Monterey Bay Aquarium Research institute মন্টেরি বে অ্যাকোয়ারিয়াম গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রখ্যাত গবেষকরা দেখলেন পারদর্শী মুড়োর মাছ তাদের চোখ দূরবীনের মত ঘুরিয়ে নিয়ে লক্ষ্য স্থির করতে পারে এদের শিকার দেখতে পেলে।
কি কেমন ন্যালাখেপা দেখতে জানতে ইচ্ছে করছে?
৬ ইঞ্চি মত লম্বা এই মাছের লম্বা গম্বুজ আকারের স্বচ্ছ মাথা রয়েছে যার ভিতর দিয়ে গোটা মগজ বীক্ষণ সম্ভব।
কি ভাবছেন খুব সরল সোজা মাছ তাই না?
না, এদের বদনাম আছে চোর হিসেবে।
এমনিতে এরা জেলিফিশ, ছোট মাছ ধরে খায় তবে নিডারিয়ান দের খাদ্য চুরিতে এদের হাত আছে! এই যাঃ এদের তো হাতই নেই, না না শোলে সিনেমার ঠাকুর নয় বরং বলা যায় এদের পাখনা আছে।
হ্যাঁ গববরের মত, বড় জেলিফিশের শুঁড়ে আটকানো শিকার ডাকাতি করতে এদের বাঁধে না।
এই কিম্ভুতকিমাকারের নাম কি ?
ডাক নাম ব্যারেলআই ওরফে স্পুকফিস,
অবাক হলে চলবে?
সবুজ ড্রামের মত অলফেক্টরি অঙ্গ যাকে দেখে চোখ বলে ভুল হয় তাই এই নাম, ব্যারেলআই।
আর মগজ দেখতে পাওয়ার মধ্যে কেমন ভূত ভূত গন্ধ আছে না? তাই তো স্পুক।
বিজ্ঞান সম্মত নাম Macropinna microstoma।
কি শিব্রামের মত পাতালে পাঁচ দিন কাটাবেন নাকি?
আরো অনেক কিছু দেখতে পাওয়া যাবে কিন্তু।
তথ্য ও ছবি সাহায্যে
অন্তর্জাল।
দারুণ
উত্তরমুছুন