ইয়েতি কাঁকড়ার কাহিনী

       


      🦞🦞 ইয়েতি কাঁকড়ার খোঁজে🦞🦞

    🔻🔹🔺➖🔻🔹🔺➖🔻🔹🔺➖

হিমালয়ের সেই চির রহস্যময় তুষারাবৃত পর্বতভূমি যেখানে কান পাতলে এখনও শোনা যায় এক

স্থানীয় কিংবদন্তীর কাহিনী, নাম ইয়েতি।



বলেছে অনেকে দেখেছে তবু অকাট্য প্রমাণ নেই কারো কাছে।

পাশ্চাত্যে সেই বিশালাকায় ভল্লুক সদৃশ তুষার মানব নাম পেয়েছে Abominable Snowman বা 

জঘন্ন তুষার-মানব।



এইতো সেই ২০১৯ সে এপ্রিলে সম্ভবত ভারতীয় সেনা দাবী করল যে তারা মাকালু বেস ক্যাম্পের কাছে দেখতে পেয়েছে রহস্যময় ইয়েতির পায়ের ছাপ।



কি জানি কি রহস্য লুকিয়ে আছে??


তবে রত্নাকর সব রহস্যের আকর, এই রত্নাকরের গভীরে এক দুর্বিষহ স্থানে খোঁজ মিলেছে আরেক

ইয়েতির তবে এদের দুই পা নয় বরং বলা যায় আছে ১০ পা।





আরে বাবা এরা decapod ক্রমের অন্তর্গত যার অধীনে রয়েছে যত রাজ্যের চিংড়ি আর লবস্টার।

আদপে এরা সন্ধিপদী বলা যায় জলজ সন্ধিপদী পর্বের প্রাণী।



২০০৫ সালে Robert C. Vrijenhoek এর তত্ত্বাবধানে Monterey Bay Aquarium Research Institute 

মন্টেরি বে অ্যাকোয়ারিয়াম গবেষণা ইনস্টিটিউটের

সমুদ্র গবেষক দল সাবমেরিনে চরে নামলেন অতলে।

উদেশ্য অতলে অচিন প্রাণীদের দর্শন।

৭ই মার্চ ২০০৬ তে তারা তুলে ধরলেন সমগ্র বিশ্বের কাছে আরেক ইয়েতিকে অবশ্য এটি একজাতের

লবস্টার বা বলাযায় কাঁকড়া।

এর নাম দেওয়া গেল ইয়েতি লবস্টার বা ইয়েতি-কাঁকড়া বিজ্ঞান সম্মত নাম

Kiwa hirsuta।



শল্কো প্রাণীদের কিম্বদন্তী দেবী kiwa কিওয়া।

লাতিন শব্দ hirsuta হিরসুটা অর্থ রোমশ।

কিন্তু কেন এই ইয়েতি বদনাম?

আরে সারা শরীর জুড়ে রেশমী স্বর্ণকেশী setae সিটা।

লাতিন শব্দে এই সিটা অর্থ ক্ষুদ্র শক্ত লোম।



এরা থাকেও এক বিপদসংকুল স্থানে,

সমুদ্রের নিচে Hydrothermal vent বা জল তাপীয় রন্ধ্রে। 

আসলে সমুদ্রতলের যেখানে শীতল জল সমুদ্রতলের রন্ধ্র পথে পৌঁছে যায় উত্তপ্ত গলিত ম্যাগমার কাছে সেখানে তৈরি হয় এই Hydrothermal vent বা 

জল তাপীয় নির্গম পথ।



কিন্তু সেই পথে বেড়িয়ে আসে বিষাক্ত বাষ্প যেখানে প্রাণীর বাঁচা অসম্ভব।

এইখানে প্রয়োজন সাহায্যকারী বন্ধুর।

এই ইয়েতি-কাঁকড়া তার রোমে ঠাই দেয় একপ্রকার ফিলামেন্টাস ব্যাকটিরিয়াদের যারা প্রধানত 

বিষ বাষ্প থেকে প্রাণীটিকে রক্ষা করে।



অতল অন্ধকারে প্রায় অন্ধ এই প্রাণী একে অপরের সাথে মিলে মিশে বসবাস করে। 

তাই দেখলে মনে হবে যেন শত শত রোমশ কাঁকড়ার মেলা লেগেছে।



যদিও গবেষণা চলছে তাদের জীবন নিয়ে তবু ধারণা করা হয় মা কাঁকড়া তার ডিম পাড়ার জন্যে 

জল-তাপীয় নির্গম পথ থেকে বহুদূরে ঠান্ডা অঞ্চলে চলে যায়। এই সময় মা কাঁকড়া অনাহারে থাকে এবং সম্ভবত সেখানেই আত্মত্যাগ করে।

দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের প্রায় ২০০০ মিটার গভীরে

থাকা এই প্রায় ১৫ সেন্টিমিটার লম্বা প্রাণীরা যে কি খায় তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে বিস্তর। হয়ত জলজ অণুজীব!



তবে এদের জেনেটিক কোড এদের এক পৃথক পরিবারে এনে ফেলেছে নাম kiwaidae ।

পূর্ণাঙ্গ গবেষণায় উদঘাটিত হবে এদের জীবন বৈচিত্রের পুঙ্খানপুঙ্খ বিবৃতি এটিই আশা।



🦞অতল তলে কিম্বদন্তী প্রাণী ইয়েতি কাঁকড়ার কাহিনী কেমন লাগল?



তথ্য ও চিত্র সাহায্যে

অন্তর্জাল।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

স্বকাম সমাচার

নিষিদ্ধ অঙ্গের নিদানতত্ত্ব

ভবিষ্যতের ভয়