ভোলা ভাওয়ালের ভয়-ভাগ ২
👺👹👻ভোলা ভাওয়ালের ভয়-ভাগ ২☠️💀🧟♂️
🔺🔹🔻🔺🔹🔻🔺🔹🔻🔺🔹🔻
' যেইহানে ভূতের ভয় সেই হানেই সন্ধ্যা অয় ,
আমি দ্যাকসি যেই দিন হালায় বিনা টিকিটে রেলে উঠসি ওইদিন টিটি অ্যাইসা আমায় ধরসে '
প্রেমাদার আক্ষেপ ঝরে পড়ল বৈকালিক চায়ের আড্ডায়।
ঘোষাল খুড়ো বলল
🧓:: মনস্তত্ত্ব, নিখাদ মনস্তত্ত্ব, যেদিন আপনি টিকিট কেটে ওঠেন নি, আপনার ভয় আপনার আচরণে স্পষ্ট প্রকাশিত ছিল, এবং তাই টিটি কাকা আপনাকে চেপে ধরেছে।
ভয় চেপে রেখেও রাখতে পারেন নি।
কিছু স্থান বা মুহূর্ত বা বলা যায় পরিস্থিতি মানুষের এমন থাকে যাকে মানুষ প্রাণপণে দূরে রাখতে চায়, কিন্তু সেই চাওয়া যখন আতঙ্কে গিয়ে দাড়ায় সেই ত্রাসকে বলা যায়
Agoraphobia অ্যাগোরাফোবিয়া
এই অনাবশ্যক আতঙ্ক অ্যাগোরাফোবিয়ায় ভোগা ব্যাক্তি নিজেকে আটকা পড়া, অসহায় বা বিব্রত বোধ করে।
গ্রীক শব্দ agora, অ্যাগরা অর্থ “place of assembly,” বা সমাবেশ স্থল, “open space,”
বা খোলা জায়গা “marketplace,” বা বাজার। ইংরেজি শব্দ phobia মানে তো জানাই আছে, “fear.” বা ত্রাস, এই দুটি শব্দ মিলে তৈরি অ্যাগোরাফোবিয়া।
👴🏼:: হ ঠিকই কইসো, টিটি ধরব এই ভয়েই হাতের তালু কপাল আগুন গরম হইয়া যাইত।
🧓:: আগুন, আগুন সত্যি ত্রাসের কারণ যখন সে বাগ মানে না, দাবানলে ছাই হয় বনাঞ্চল।
তবে এই আগুনেও অনেকের থাকে অনাবশ্যক ভীতি
যাকে বলে
Pyrophobia পাইরোফোবিয়া।
গ্রীক শব্দ pyro পাইরো মানে আগুন।
কেউ হয়ত দেশলাই জ্বালালো, ব্যস বেচারা আতঙ্কে অস্থির হয়ে উঠল।
👴🏼:: কও কি ঘোষাল? হেইলে হ্যারে তো আন্ধারে থাকতে হইব?
বিনা আগুনে আলো পামু ক্যামনে?
🧓:: ঐযে বলেছিলে না
' যেইহানে ভূতের ভয় সেই হানেই সন্ধ্যা অয় ,'
তো এই অন্ধকারে অকারণ আতঙ্কিত হয়ে যায় যারা, তাদের এই অনাবশ্যক অন্ধকার আতঙ্ককে বলে
Nyctophobia নিক্টফোবিয়া।
হয়ত হটাৎ করে লোর্ডশেডিং, ব্যস তার আতঙ্ক তাকে অধীর করে তুলবে।
প্রাচীন গ্রিক শব্দ nyx নিস্ক থেকে এসেছে Nycto নিক্ট কথাটি যার অর্থ রাত।
👴🏼:: দ্যাহ দেহি, আন্ধার না হইলে ঘুমাইব কেমতে?
আমার আবার আলো জ্বালাইয়া ঘুম আহে না।
🧓:: যদি ঘুমোতে ভয় হয়?
হ্যাঁ অতীতের কিছু দুঃসহ স্মৃতি যা ধীরে ধীরে মনে শিকড় গেড়ে বসেছে এই নিদ্রা ভীতির কারণ হতে পারে।
এই অকারণ সুসুপ্তি শঙ্কা কে বলে
হিপনোফোবিয়া hypnophobia।
পুরাতন জার্মান ভাষা hypno হিপনো অর্থাৎ নিদ্রা।
👴🏼:: দ্যাহ ভাই সাফ কথা কই, হারাদিন খাটুনির পর কেলান্তিতে ঘুম আইবই, হ।
🧓:: আর যদি কাজ কর্মে ভয় থাকে তবে?
নিজের কাজের জায়গায় পরিবেশ পরিস্থিতি বিষয়ক অনাবশ্যক আতঙ্কে ভোগে কিছু মানুষ।
এই কর্মভীরু ভয় কে বলে
Ergophobia এরগোফোবিয়া।
গ্রীক শব্দ প্রাক ইন্দো ইউরোপিয়ান ভাষা হয়ে এসেছে ergon এরগণ কথাটি যার অর্থ কাজ।
👴🏼:: হেই কুন সুডো বেলায় পড়সিলাম
'সবে মিলে করি কাজ/ হারি জিতি নাহি লাজ'
কাম রে ভয় পাওনের কি আসে ব্যুঝিনা!
🧓:: সবে মিলে গড়ে সমাজ তাইতো?
'সকলের তরে সকলে আমরা
প্রত্যেকে আমরা পরের তরে'
শুধু নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকার জন্যই মানুষ জন্মেনি। পরস্পরের উপকার সাধনের মধ্যেই মানব জীবনের চরম সার্থকতা নিহিত এইটাই বুঝি সুস্থ সমাজের মূলমন্ত্র।
এইবার যদি সেই সমাজকেই ডরিয়ে চলে মানুষ।
যদি সকলের সাথে মিশতে মনে জাগে ত্রাস তবে?
সেই সমাজ শঙ্কা কে বলে
Sociophobia সোসিওফোবিয়া।
একে আরো বলা হয় Social anxiety disorder সামাজিক উদ্বেগ ব্যাধি সংক্ষেপে: SAD,
বা social phobia তথা সামাজিকতার প্রতি ভয়...
লাতিন শব্দ socius সোসিয়াস কথার অর্থ বন্ধু।
সেখান থেকেই সোশ্যাল বা সামাজিক।
👴🏼:: হেই, রাস্তায় দেহি মাইসে একা একাই বকে।
কারো সাথে কইব হেই রাস্তা আর রাহে নাই।
🧓:: শ্যামল মিত্রের সেই গানটা মনে আছে
"এই পথেই জীবন এই পথেই মরণ আমাদের
সব কিছু পথের বুকেই"
পথ পারাপারে প্রচণ্ড ভীতি থাকে কিছু মানুষের।
হ্যাঁ ঠিক তাই, ধরা যাক যানবাহন চলাচল করে যে পথে সেই পথের এপার থেকে ওপারে যেতে আতঙ্কে ভোগে কিছু মানুষ।
এই পথ পেরোবার আতঙ্কের আরেক নাম
Dromophobia ড্রমোফোবিয়া।
প্রাচীন গ্রিক শব্দ dromos ড্রমোস কথার অর্থ
racetrack রেসট্র্যাক বা দৌড়ের নির্দিষ্ট পথ।
👴🏼:: অ্যা মল যা! হেইলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা খাড়াইয়া
থাকবান লাগবো!
পোলায় একখান ইংরাজি সিনেমা দেহাইসিল
'race against time' 'রেস এগেইনস্ট টাইম'
এইদিকে পুলা বিমার, ট্যাহা লাগব ওইদিকে সময় খুব কম!
এখন এই হইলে করব কি?
🧓:: সময় ও স্রোত বয়ে যায় নিজ খেয়ালে
কিন্তু এমন খেয়ালি মানুষ আছে যার এই সময়ে ভয়!
'এই ! সময় পেরিয়ে গেল' এই আতঙ্ক অক্ষাইত হয়
Chronophobia ক্রোনোফোবিয়া নামে।
গ্রীক শব্দ Chrono ক্রোনো কথার অর্থ হল সময়।
কিছু ক্ষেত্রে শুধু সময়ে শঙ্কা জাগে তাই নয় বরং
ঘড়ি দেখতেই ঘাবড়ে যায় মানুষ।
তাদের এই ঘড়ি আতঙ্ক অক্ষাইত
Chronomentrophobia ক্রোনোমেন্ট্রোফোবিয়া
নামে।
ঠিক এমন সময় কঠিন কর্কশ কণ্ঠস্বর কানে এল
' বলি রাত কটা বাজে অ্যা! না খেয়ে বক্তিমে করলেই পেট ভরবে ত'
ঘোষাল গিন্নী।
সুতরাং ঘোষাল খুড়ো গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে চলল বাড়ির পথে।
গিন্নীর ডাক বলে কথা!
এই আড্ডা আর বসবে তো?
অজানা ভয়ের বিষয়ে আরো কি জানতে চান?
কি মতামত আপনাদের?
ইয়ে গিন্নী ভীতি কে যেন কি বলে?
তথ্য সাহায্য ও চিত্র সংযোজন
অন্তর্জাল।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন