couvade syndrome of men

 


           কুমারের কৌভ্যাড কাল

<^><^><^><^><^><^><^>^><^><^><^><^><^

কথা হল কুমার মোটেই পরশ্রীকাতর নয়, পরস্ত্রীকাতর ত বিলকুল নয় বরং বলা যায় 

পরদুঃখকাতর।

 হারুদা বলেন কুমার আবেশী ছেলে,

না না আয়েশী নয়, আবেশ মানে কেউ কষ্টে কাতর হলে সেই কষ্ট কিরকম ভাবে কুমারের মধ্যে সঞ্চারিত হয় তাই ভেবে অবাক হতে হয়।

(কাল্পনিক চিত্র ও চরিত্র)



প্রথম গোল বেঁধেছিল বিয়ের বিদায় লগ্নে,

পিতা গৃহ বিচ্যুত বধূ যখন ক্রন্দনরতা 

তখন কুমার কেঁদে ভাসাচ্ছে হাপুস নয়নে।


(কাল্পনিক চিত্র ও চরিত্র)

এসব দেখে ঠেকে নব বধূ শেষে কান্নাকাটি থামিয়ে সোজা গাড়িতে গেড়ে বসেছিল।

বিবাহ এবং তদপরে মধুচন্দ্রিমা যাপন এবং অবশ্যম্ভাবী পর এল সেই সময় যখন কুমার

সকলকে কাকা বানাবে, বাবা বনবে নিজে।


দ্বিতীয় গোল তখন বাঁধল।


নবগঠিত ভালোবাসার ভ্রূণ ধীরে ধীরে বেড়ে উঠছে স্ত্রীর শরীরে, সঙ্গে লক্ষণ মাথা ঘোরা, গা বমি, 

এটা সেটা খাবার অদ্ভুত বায়না।

এইদিকে কুমারের কাহিল দশা,

পেটে পিঠে কোমরে অসহ্য ব্যাথা, বদহজম ফলাফল বমন, অস্বাভাবিক মেদ বৃদ্ধি, মাথা ধরা, মেজাজ খিচখিচে।

ফচকে ফনী বলেই ফেলল 'বৌমনি তোকে প্রেগনেন্ট করেছে বুঝি!!'

বোঝো ঠ্যালা

➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖

কুমারের কার্যকলাপ দেখে যারা মুখ টিপে বেশ করে হেসে নিলেন তাদের বলি এটিও আবেশ,

 ঠিক চুম্বক আবেশের মতন।

পরিষ্কার করে বলি তবে...........



Sir Edward Burnett Tylor 

এডওয়ার্ড বার্ণেট টাইলোর সাহেব ছিলেন ১৯ শতকের প্রখ্যাত anthropologist নৃতত্ত্ববিদ।

১৮৬৫ সাল নাগাদ তিনি একটি শব্দ সকলের সামনে আনেন, couvade কৌভ্যাড।



ফরাসি শব্দ couver কভার মানে তা দেওয়া।



যেমনটি পুরুষ ও স্ত্রী পাখী মিলে ডিমে দেয়।

আদিম গোষ্ঠী গুলির ক্ষেত্রে একটি বিশেষ ব্যাপার লক্ষ্য করেন তিনি। যে পুরুষ পিতা হতে চলেছে,

গর্ভবতী স্ত্রীর মত তারও সেই অভ্যাস গড়ে উঠছে।

স্ত্রীর মত পুরুষেরও প্রসব বেদনা অনুভূত হচ্ছে,

যৌণ ইচ্ছা হ্রাস পেয়েছে, কাজে কর্মে অনীহা জন্মেছে।

হতে পারে এটি প্রাচীন কোন রীতির একটি অংশ, কারণ সদ্যজন্মা শিশুকে পুরুষ তার স্তন্য বৃন্ত স্পর্শ করাচ্ছে যেন এইবার সে মাই দেবে!



Cantabri বা Ancient Cantabrians বা

আদিম ক্যান্টাব্রি জনগোষ্ঠীতে এই রেওয়াজ ছিল।



রোমানদের পূর্ববর্তী গোষ্ঠী এই ক্যান্টাব্রি জনগোষ্ঠী।



পিতৃত্বে দীক্ষা নেওয়ার আদিম আচার এইটি।

যাইহোক নামকরণ তো হল, 

কিন্তু নামকরণের সার্থকতা খোঁজা যাক......

গর্ভবতী স্ত্রীর গর্ভাবস্থা কালীন অবস্থা যে পুরুষ ভোগ করে তার সেই অবস্থা কে বলা যায়

couvade syndrome কৌভ্যাড সিনড্রোম।



সিনড্রোম বা উপসর্গনিচয় অর্থাৎ বহু সিম্পটম বা লক্ষণ এর সমাহার।

কি কি লক্ষণ?



প্রায় প্রায় ৩৫টির মতন লক্ষণ পুরুষ তথা সম্ভাব্য পিতায় পরিলক্ষিত হয় এই কৌভ্যাড উপসর্গনিচয়ে



যেমন...

🤰🏿পুং স্তনের বৃদ্ধি, স্তন বৃন্তের ঋজুতা,

🤰🏾শুষ্ক নাভি

🤰🏽কানে অত্যধিক খইল,

🤰🏼অনিদ্রা,

🤰🏻ব্যাথা ব্যাথা ব্যাথা, 

(যা ভবানী ঘোষের বাত বিদ্যুৎ তেলে যাবার নয়!)

🤰মর্নিং সিকনেস তথা সকালে, বিকেলে বা দিনভর যে গা-পাক দেওয়া বা বমির পর্ব।

🤰দেহ রসায়ন তথা হরমোনে পরিবর্তন।

🤰🏻স্থূলতা বা মেদ অর্জন ।



ইত্যাদি আরো অনেক।

অর্থাৎ গর্ভাবস্থায় পুরুষ।



সহানুভূতিশীল গর্ভাবস্থা 

বা sympathetic pregnancy প্রায় সমার্থক শব্দ।



❓কেন হয়? 

❓কেন এতটা সহানুভূতি প্রকাশ পায় পুরুষে?


কেউ বলে এটা কারণ, 

কেউ বলে ওটা

থিসিস হাইপোথিসিস জমে

বনে কেউকেটা।


( সম্ভাব্য চিত্র)

এই যেমন Norman Duerbeck নরম্যান ডুয়েরবেক

ক্যালিফোর্নিয়ার সান ডিয়েগোর প্রখ্যাত ধাত্রীবিদ্যা বিশারদ-স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের মতামত

🔻stress তথা ধকল

🔺empathy তথা সহমর্মিতা



এছাড়াও

🔺সেই যুগল যারা সন্তান হারিয়েছে,

🔻সেই যুগল যারা সন্তান হীনতায় বিষণ্ণ

🔺গর্ভাবস্থায় রক্তপাত হতে দেখা সম্ভাব্য পিতা।


এখনও ধোঁয়াশা এটি শারীরিক না মানসিক সমস্যা।



কিছুক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা দেখেছেন স্ত্রীর গর্ভাবস্থার

প্রথম ত্রৈমাসিক তথা first trimester এ সহানুভূতিশীল গর্ভাবস্থার লক্ষণ সমুহ প্রকাশ পায় যেটি দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে কমে যায় আবার পুনরুত্থান

পায় চূড়ান্ত ত্রৈমাসিক তথা final trimester এ।



❓এটিকে কি phantom pregnancy 

ফ্যান্টম প্রেগন্যান্সি তথা ভুতুড়ে গর্ভাবস্থা 



বা হিস্টিরিকাল গর্ভাবস্থা বা জাল গর্ভাবস্থা বলা যায়❓



❓কিম্বা নকল সহোদর দ্বন্দ্ব বা 

pseudo sibling rivalry❓

❓কিম্বা পিতৃত্ব মাতৃত্বের দ্বন্দ্ব❓

❓নাকি পুং জৈব রসায়ন তথা হরমোনের বিশৃঙ্খলা❓



আপনাদের কি মতামত?



বিশেষ ভাবে কৃতজ্ঞ

চিকিৎসক শ্রীমতী মধুরেখা সাহা 

ধাত্রীবিদ্যা বিশারদ-স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ।


বিষয় তথ্য ও চিত্র সাহায্যে


অন্তর্জাল।



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

স্বকাম সমাচার

নিষিদ্ধ অঙ্গের নিদানতত্ত্ব

ভবিষ্যতের ভয়