হর্ষ-বিষাদ বিবরণী

 



😆😆😞☹️হর্ষ-বিষাদ বিবরণী 😆😞😆😞

↑↓↑↓↓↑↓↓↑↓↑↓↓↑↓↓↑↓↓↑↓↓↑↓↑↓↑↓↓↑↓↓↑↓

সুখেও কেদে ওঠে মন

এমনো হাসি আছে বেদনা মনে হয়

জলে ভরে দু নয়ন

সুখেও কেদে ওঠে মন


সত্যিই তো, দুঃখে কাঁদবে সুখে হাসবে, বিপরীত কেন হবে?


😆😆😆আগে বলাযাক মানুষ হাসে কেন?


বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ উদ্দীপনা (stimuli) মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস এবং প্রভুগ্রন্থি পিটুইটারি থেকে ক্ষরণ করায় জৈব রসায়ন endorphin এন্ডোরফিন ।

এই এন্ডোরফিন হরমোনের অপর নাম feel-good hormone সুখী হরমোন।

ব্যাথা (শরীরের বা মনের) কমাতে এই এন্ডোরফিনের ভূমিকা অশেষ।

আধুনিক স্নায়ু শরীরবিদগণের মতে

মস্তিষ্কের ventromedial prefrontal cortex (vmPFC) অর্থাৎ সেরিব্রাল কর্টেক্সের সন্মুখ ভাগের

(prefrontal cortex (PFC) is the cerebral cortex covering the front part of the frontal lobe)

অন্তর্বর্তী স্থানে সক্রিয়করণ তথা activation কারণ হয় এন্ডোরফিন হরমোনের অপর নাম feel-good hormone সুখী হরমোন ক্ষরণের।



গবেষণায় আরো দেখা গেছে লিম্বিক সিস্টেমের অংশ বিশেষ এই হাসির সঙ্গে জড়িত।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য এই limbic system লিম্বিক সিস্টেম মানব মস্তিষ্কের এক আদিমতম অংশ যা মানুষের বিভিন্ন আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে।

এই লিম্বিক সিস্টেমের দুটি অংশ যথাক্রমে

amygdala অ্যামিগডালা এবং hippocampus হিপোক্যাম্পাস (seahorse বা সামুদ্রিক ঘোড়া নামের অনুকরণে, যেটি এসেছে গ্রীক শব্দ ἱππόκαμπος থেকে। ππος মানে hippos, "horse" বা ঘোড়া এবং κάμπος মানে kampos, "sea monster"বা সামুদ্রিক দৈত্য)।



অতএব এই লিম্বিক সিস্টেম এবং জৈব রসায়ন

এন্ডোরফিন মানুষের হাসির জন্যে দায়ী।

ইতিহাস ক্লাসে সত্যেন স্যারের কান মলা খেতে খেতে

জেনেছিলাম মানুষ তিন কারণে হাসে।

দেখে হাসে, বুঝে হাসে আর না বুঝে হাসে।

কঠোর বাস্তবতায় ভরা জীবনে জেনেছি মানুষ দুঃখেও হাসে।


সুতরাং পরবর্তী প্রশ্ন মানুষ কাঁদে কেন?☹️😞☹️


কান্না শুরু হয় সেরেব্রাম থেকে। সেরেব্রাম হলো মস্তিষ্কের সবচেয়ে বড় অংশ, এজন্য সেরেব্রামকে বলা হয় ‘গুরুমস্তিষ্ক’। সেরেব্রামেই থাকে আমাদের সব ধারণা, কল্পনা, চিন্তা-ভাবনা, মূল্যায়ন ও সিদ্ধান্ত।



কান্না যদিও বহু ধরনের তবে দুঃখের কারণে কান্না প্রধানত আবেগের জন্যে।

প্রবল আবেগের চাপ মুক্ত হতে ‘গুরুমস্তিষ্ক’ নির্দেশ পাঠায় অন্তক্ষরা তন্ত্রে। চাপ বিমোচন জৈব রসায়ন stress hormones ক্ষরণ হয় সেই নির্দেশ মোতাবেক। 



তারা করা?


যেমন অক্সিটোসিন oxytocin , endorphin এন্ডোরফিন।

একটু গড়বড় লাগছে তাই তো?

হাসিতেও এন্ডোরফিন কান্নায়ও এন্ডোরফিন!!!!



হ্যাঁ, কেঁদে একটু হালকা বোধ হয় বৈকি, তখন একটু 

feel-good ভালো মনে হয়।

চোখের জলে মনের জ্বালা ধুয়ে যায় কিছুটা! তাই না?

সত্যি, বর্নহীন এই তরলে লুকিয়ে কত আবেগ, কত যন্ত্রণা, কত আর্তনাদ, কত ভালোবাসা আবার কত আনন্দের অব্যক্ত বক্তব্য।


কাঠ-খোট্টা বিজ্ঞানের ভাষায় অশ্রুগ্রন্থি থেকে নির্গত তরল হল নয়ন বারি বা চোখের জল।


কি থাকে এই চোখের জলে?


প্রধানত জল, লবণ, বিভিন্ন অ্যান্টিবডি এবং লাইসোজাইম যা কিনা এক ধরনের উৎসেচক। তবে ভিন্ন ভিন্ন কারণে অশ্রুর উপাদানও বিভিন্ন হয়।


প্রধানত তিন ধরনের অশ্রু লক্ষ্য করা যায়


💧basal tears বা মৌলিক অশ্রু:: 


এর কাজ চোখ কে ভেজা ও পিচ্ছিল রাখা। এবং জীবাণুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।


এতে মূলত থাকে মিউসিন, স্নেহ বস্তু, লাইসোজাইম, ল্যাক্টোট্রান্সফেরিন, ল্যাক্রিটিন, শর্করা, ইউরিয়া, সোডিয়াম ও পটাশিয়াম লবণ।


💧reflex tears অভিব্যক্তি অশ্রু::: 


যন্ত্রণাদায়ক পদার্থের উপস্থিতিতে এই অশ্রুর আবির্ভাব। পেঁয়াজ কাটার সময় বা চোখে লঙ্কার গুঁড়ো, বা ওই জাতীয় পদার্থ পড়লে এই অশ্রুর দেখা মেলে। তখন নাকের জল চোখের জল অবস্থা, সঙ্গে কাশি, বমি ইত্যাদি হতে পারে বটে।


💧:: Emotional tears আবেগ ময় অশ্রু::


ক্রোধ, দুঃখ , বেদনা, যন্ত্রণা, আবার আনন্দ এই অশ্রুর কারণ।



[[দেখে নিতে পারেন

https://golpokothaybiggayan.blogspot.com/2022/02/blog-post_7.html]]


এইবার মূল বক্তব্যে আসা যাক

দুঃখে হাসি এবং সুখে কান্না কেন আসে?


☹️দুঃখে হাসি😆

হাসির চাইতে বড় ওষুধ কিস্যু নেই, বলা হয়

Laughter can help lessen your stress, depression and anxiety and may make you feel happier. 

এইবার চরম শোক, যেটি বিভিন্ন মানুষে বিভিন্ন কারণে হতে পারে....

ধরা যাক, সেই কাছের মানুষটি যাকে সুখে দুঃখে সর্বদা কাছে পেয়েছেন, যাকে মন খুলে সব কথা নির্দ্বিধায় বলা যেত, সেই মানুষটি দু দিনের জ্বরে পঞ্চভূতে বিলীন............

এইবার আপনি আশ্রয়হীনতায় ভুগবেন? বারেবারে মনে হবে এই বার কি হবে? কাকে বলবেন? নিজের বলতে আর রইল কে?

পরিস্থিতির চাপে আবেগ আপনাকে নিয়ে যেতে পারে হতাশা তথা depression এর দোরগোড়ায়।


মগজ তা হতে দিতে পারে না। এই দুঃখ কাটাতে তার যারপরনাই চেষ্টা থাকে। তারই ফলশ্রুতি দুঃখের হাসি।

১৯৬০ সালে মনস্তত্ত্বিক (psychologist) Stanley Milgram সাহেব তার এ বিষয়ক পরীক্ষাটি করেছিলেন।



যাইহোক হাসিতে মগজ ক্ষরণ করে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র নিউরোপেপটাইড neuropeptides যা কিনা stress তথা মানসিক চাপের বিরুদ্ধে লড়ে। 





সেই সঙ্গে দোসর হয় আরো অনেক নিউরোট্রান্সমিটার neurotransmitters যেমন ডোপামিন dopamine, serotonin সেরোটোনিন (এর অন্য নাম সুখের হরমোন)এবং endorphins এন্ডোরফিন যারা নিজের খেলা দেখায়।





😆সুখে কান্না☹️

আনন্দ অশ্রু tears of joy আবেগের একটি ভারসাম্য রক্ষার বহিঃপ্রকাশ মাত্র।


যেমন ধরা যাক,

কেউ কথা রাখেনি, কেউ সাহায্য অবধি করেনি, কেউ খোঁজ টুকু রাখতে ভরসা পায়নি, ঠিক এমন অবস্থায় সম্পূর্ন নিজের উদ্যমে আপনি পেলেন সেই সাফল্য যা অনেকের স্বপ্ন, আজ আপনার বাস্তব।

এই সফলতার খন্ড মুহূর্তে আপনার স্মৃতিপটে ক্ষণিকা হয়ে ফুটে উঠবে সেই উপেক্ষায় ভরা দিন গুলির ঝটিকা সফর। এই বিষাদময় অতীতের গৌরোজ্জ্বল ভবিষ্যতের দোরগোড়ায় দাড়িয়ে আনন্দ অশ্রু tears of joy সম্পূর্ন স্বাভাবিক।

এর জন্যেও সেই লিম্বিক সিস্টেম দায়ী।

এমতাবস্থায় লিম্বিক সিস্টেমের অংশ অ্যামিগডালা একটি প্রবল স্নায়ু সংকেত পাঠায় (strong neural signal from the amygdala) যা আমাদের সয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্রকে (autonomic nervous system) উদ্দীপিত করে যার ফল স্বরূপ এই আনন্দ অশ্রু tears of joy।



সুতরাং স্পষ্ট হল হর্ষ-বিষাদ বিবরণী।


ঐযে বললাম ভারসাম্য। এটি বিঘ্নিত হলে সমস্যা।

এমন এক সমস্যার নাম pseudobulbar affect (PBA) সিউডোবালবার এফেক্ট ।

সিউডো pseudo অর্থ ছদ্ম

Bulber বালবার বলতে বোঝায় গোলাকার টিস্যুর আকৃতি (যেটি কিছুটা ক্রোকাস বা টিউলিপ বাল্বের মতো আকৃতির)।

সংজ্ঞা হিসেবে বলা যায়

pseudobulbar affect

Inappropriate involuntary laughing and crying due to a nervous system disorder.

অর্থাৎ স্নায়ু তন্ত্রের বৈকল্যের দরুন হাসি বা কান্নার অনিয়ন্ত্রিত বেগ।



এ বিষয়ে আর এক দিন হবে?

কি মনে হয় আপনাদের?


বিষয় সাহায্যে

Human anatomy and physiology

By Ross and Wilson

অন্যান্য সাহায্যে

অন্তর্জাল




মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

স্বকাম সমাচার

নিষিদ্ধ অঙ্গের নিদানতত্ত্ব

ভবিষ্যতের ভয়